ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলে নোভা কাখোভকা বাঁধে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়ায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে অঞ্চলটিতে। ইতোমধ্যেই হাজার হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছে সেখান থেকে। বাঁধ ধসে ৮০টি শহর ও গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এদিকে কাখোভকা বাঁধ ধ্বংসকে ‘বৃহৎ পরিবেশগত ধ্বংস’ অভিহিত করে জেলেনস্কি বলেন, এ ধরনের আক্রমণ রাশিয়ান বাহিনীর দখল করা অঞ্চল পুনরুদ্ধারে ইউক্রেনের পরিকল্পনাকে পরিবর্তন করতে পারবে না।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে জেলেনস্কি আরও বলেন, রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে কাখোভকা বাঁধটি ধ্বংস করেছে, যা ক্রিমিয়াকে পানি সরবরাহ করার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, এ আক্রমণ দ্বারা বোঝা যায় যে রাশিয়ান দখলদাররা ইতিমধ্যে বুঝতে পেরেছে যে তাদেরও ক্রিমিয়া থেকে পালাতে হবে।
আমরা আমাদের সমস্ত ভূমি মুক্ত করব। বাঁধটি উড়িয়ে দিয়ে রাশিয়া তাদের পরাজয়কে এড়াতে পারবে না। তবে যুদ্ধ-পরবর্তী ক্ষতিপূরণের খরচ মস্কোকে একদিন ইউক্রেনকে দিতে হবে। বলে জানান জেলেনস্কি।
ইউক্রেনীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর জানান, এখন পর্যন্ত হাজারের ওপর বাসিন্দাকে সরানো গেছে নিরাপদ আশ্রয়ে। বাকিদের উদ্ধারে কাজ করছে অর্ধ-শতাধিক বাস। তীব্র পানির তোড়ে ভেসে গেছে ২৪টি ঘরবাড়ি-স্থাপনা। কোনো কোনো এলাকায় ৩৬ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে পানির উচ্চতা।
এদিকে কাখোভকা বাঁধটি ধ্বংসের বিষয়ে এখনও একে অপরকে দোষারোপ করছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনের গোলার আঘাতেই ধসে পড়েছে এই বাঁধ। তবে ইউক্রেন বা রাশিয়া কারও দাবিই যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় আল জাজিরা।
বাঁধটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর পরই আশেপাশের এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়। স্থানীয় এক সামরিক কর্মকর্তা বলছেন, খেরসন অঞ্চলের অন্তত আটটি বসতি ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।
এই বাঁধ স্থানীয় কৃষক এবং বাসিন্দাদের পাশাপাশি জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি সরবরাহ করে। এটি রুশ-অধিকৃত ক্রিমিয়ার দক্ষিণেও পানি সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যানেল।