পুষ্টির জন্য যেসব উপাদান গুরুত্বপূর্ণ, তার মধ্যে ডিম অন্যতম। শারীরিক সমস্যা না থাকলে প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কেননা একটি সেদ্ধ ডিমে ৭৭ ক্যালরির সঙ্গে থাকে ৬ দশমিক ৩ গ্রাম উচ্চমানের প্রোটিন। ডায়েট কিংবা নিয়মিত যারা ব্যায়াম করেন তাদের জন্যও ডিম নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য। তবে বেশ কিছুদিন থেকেই অস্থির ডিমের বাজার। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা জমে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে চায়ের কাপে।
ডিম সেদ্ধ করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। এতে করে যখন ডিমের দাম বেশি থাকে তখন অন্তত বাড়তি মূল্য দিয়ে আপনাকে ডিম কিনতে হবে না। এখন প্রশ্ন হলো, ফ্রিজে সিদ্ধ ডিম রাখলে কতদিন ভালো থাকে কিংবা এর পুষ্টিগুণ ঠিক থাকে কি না?
সাধারণত ডিম সেদ্ধ করে রাখার পর স্বাভাবিক অবস্থায় দুই ঘণ্টা পর্যন্ত ভালো থাকে। ডিম সাধারণত ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলিসিয়াসের কম তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা উচিত।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর দেওয়া তথ্যমতে, ডিম সেদ্ধ করার পর দুই ঘণ্টার মধ্যে খেয়া ফেলা উচিত। যদি তা কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তখন ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। তবে খোসা ছাড়ানো ডিম ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে না।
ফ্রিজে সেদ্ধ ডিম সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভালো বক্স ব্যবহার করতে হবে। লক্ষ্য রাখতে হবে সেখানে যেন বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। তবে অনেক সময় ডিম ফ্রিজে রাখলে দুর্গন্ধ হতে পারে। কারণ, সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখার ফলে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। তবে এই গ্যাস ক্ষতিকর নয়।
সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখলে পুষ্টিগুণের তারতম্য হতে পারে কি না এ বিষয়ে বশেমু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ বলেন, যদি সংরক্ষণের প্রক্রিয়াগুলো সঠিক হয়, তবে এক সপ্তাহ পর্যন্ত ডিম আমরা ফ্রিজে রেখে খেতে পারব। এতে পুষ্টি উপাদানের উল্লেখযোগ্য তারতম্য হবে না। এমনিতেই সেদ্ধ ডিমে প্রোটিনের বায়োএভেইলিবিলিটি বেশি থাকে। অর্থাৎ সেদ্ধ ডিমে যে প্রোটিন রয়েছে তা খুব সহজেই শরীরে শোষণ বা হজম হতে পারে।
তবে সংরক্ষণ পদ্ধতি সঠিক হতে হবে।
এই পুষ্টিবিদের মতে, প্রথমেই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ডিম সেদ্ধ করে নিতে হবে। এ জন্য ১০-১২ মিনিট সময় নিন। এরপর ডিম ভালো করে ঠান্ডা করে নিতে হবে। খোসাসহ বা খোসা ছাড়িয়ে দুভাবেই রাখা যায়। তবে খোসাসহ হলে মুখ ঢাকনা দেয়া কোনো পাত্রে বা এয়ারটাইট বক্সে রাখতে হবে। খোসা ছাড়া হলে জিপলক ব্যাগ বা এয়ারটাইট বক্সে রাখতে হবে।
সংরক্ষণের সুবিধার জন্য ছোট ছোট বক্স বা প্যকেটে রাখতে হবে। এতে বারবার ব্যবহার করতে সুবিধা হবে। ব্যবহারের পূর্বে বেশ কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজ থেকে বের করে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যেতে পারে। এ ভাবে যে কোনো খাবারে সেদ্ধ ডিম আমরা ব্যবহার করতে পারি।