মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
spot_img

মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত

আমাদের সকলের জানা মতে প্রত্যেকটি জেলায় কিছু না কিছু বিখ্যাত রয়েছে কিন্তু কি? তা আমাদের সকলের অজানা। আজকে আমরা জানবো মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত?

মুন্সিগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের একটি প্রাশসনিক অঞ্চল। মুন্সিগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের মধ্যে অবস্থিত। আমাদের জানা মতে বাংলাদেশে ৬৪টি জেলা রয়েছে তারই মধ্যে একটি অন্যতম জেলা হলো মুন্সিগঞ্জ জেলা। মুন্সীগঞ্জ জেলার আয়তন ৯৫৪.৯৬ বর্গ কিমি।

 

 

মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত । Munshiganj kiser jonno bikkhato

মুন্সীগঞ্জ জেলার উত্তর-পশ্চিমে ঢাকা জেলা, উত্তর-পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা, দক্ষিণে মাদারীপুর জেলা, শরীয়তপুর জেলা ও পদ্মা নদী, পূর্ব দক্ষিণ দিকে চাঁদপুর জেলা, পূর্বে মেঘনা নদী ও কুমিল্লা জেলা এবং পশ্চিমে পদ্মা নদী, ঢাকা ও ফরিদপুর জেলার অংশবিশেষ অবস্থিত।

আজকের আর্টিক্যালে আপনারা জানতে পারবেন মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত?

মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত?

মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত?

 

মুন্সিগঞ্জ জেলার আলু ও ভাগ্যকুলের মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। দেশব্যাপী এর খ্যাতি আছে মিষ্টি এবং আলুর জন্য।

তাছাড়া দর্শনীয় স্থান, নামকরণ, ব্যক্তিবর্গ ও ইতিহাসের জন্যেও বিখ্যাত রয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা। মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রাচীনতম নাম হলো বিক্রমপুর। মুন্সীগঞ্জের খ্যাতি ১২৮০ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিক পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। মোঘল শাসনামলে এলাকার ফৌজদারী আদালতের প্রধান হায়দার আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সীগঞ্জ নামের উৎপত্তি।

নামকরনের দিক থেকে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিখ্যাত

ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বহু কীর্তিমান মনীষীর স্মৃতিধন্য মুন্সীগঞ্জ জেলা। মোঘল শাসনামলে মুন্সীগঞ্জ এর নাম ছিলো ইদ্রাকপুর। এই জেলা সুপ্রাচীন চন্দ্ররাজাদের তাম্রশাসনের অঞ্জলি থেকে শুরু করে পাল, সেন, মোগল, বার ভূঁইয়াদের কীর্তিতে সমুজ্জ্বল বিক্রমপুরের কীর্তিময় অংশ।

মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রাচীনতম নাম হলো বিক্রমপুর। বিক্রমপুর বাংলার একটি ঐতিহাসিক এলাকা।

মুন্সীগঞ্জের প্রাচীন নাম ছিল ইদ্রাকপুর। কথিত আছে, মোগল শাসনামলে ইদ্রাকপুরে মুন্সী হায়দার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন। মোগল শাসকরা তাকে ফৌজদার নিযুক্ত করেছিলেন। অত্যন্ত সজ্জন ও জনহিতৈষী মুন্সী হায়দার হোসেনের নামে ইদ্রাকপুরের নাম রাখা হয় মুন্সীগঞ্জ। কারও মতে, জমিদার এনায়েত আলী মুন্সীর নামানুসারে মুন্সীগঞ্জের নামকরণ হয়েছে। ১৯৮৪ সালে মুন্সীগঞ্জকে জেলা ঘোষণা করা হয়।

মুন্সিগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

মুন্সিগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ

 

পোলঘাটা সেতু

পোলঘাটা সেতু মুন্সিগঞ্জ জেলার একটি প্রাচীনতম সেতু।এই সেতু অনেকেই গায়েবী সেতু নামে আখ্যা দিয়েছে। পুলঘাটা সেতুটি এখনো রহস্যে পরিপূর্ণ রয়েছে । পুলঘাটা সেতুটি মীরকাদিম সেতু নামে পরিচিতি লাভ করেছে। মীরকাদিম সেতু মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ীতে অবস্থিত একটি প্রাচীন সেতু ও বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। পানাম এবং আব্দুল্লাহপুর গ্রাম দুটোকে সংযোগ করেছে এই সেতুটি। এই সেতু ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায়নি। সেতুটি তিন খিলান বিশিষ্ট ও এটি নির্মাণে চুন-সুড়কি ব্যবহার করা হয়েছিল।

ইদ্রাকপুর কেল্লা 

ইদ্রাকপুর কেল্লা মুন্সীগঞ্জ জেলার প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত একটি মোঘল স্থাপত্য। বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরে ইদ্রাকপুর নামক স্থানে এই দুর্গটি নির্মাণ করেন। ইদ্রাকপুর কেল্লার সুরঙ্গপথে ঢাকার লালবাগ দুর্গের সাথে যোগাযোগ ছিল বলে একটি জনশ্রুতি প্রচলিত আছেৃ।

সোনারং জোড়া মন্দির 

সোনারং জোড়া মঠ বাংলাদেশের অষ্টাদশ শতাব্দীর এই প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন। এটি মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগিবাড়ী উপজেলার সোনারং গ্রামে অবস্থিত। এই স্থাপনা দুটি মঠ নামে পরিচিতি পেলেও আসলে এগুলো হিন্দু মন্দির। মন্দিরের একটি নামফলক থেকে জানা যায় রূপচন্দ্র নামে এক হিন্দু বণিক জোড়া মঠের (সোনারং জোড়া মন্দির) নির্মাতা।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট 

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে।

মাওয়া ফেরি ঘাট

ইলিশ খাওয়ার জন্য বিখ্যাত স্থান হলো মাওয়া ঘাট।

পদ্মা রিসোর্ট

পদ্মা রিসোর্ট ঢাকা বিভাগের মুন্সিগঞ্জ জেলার পদ্মার পাড়েই গড়ে উঠেছে এই অপরুপ সুন্দর রিসোর্ট। ঢাকা থেকে পদ্মা রিসোর্ট দুরুত্ব ৫০ কি.মি.।

মাওয়া রিসোর্ট

ঢাকা থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া ১ নম্বর ফেরিঘাট থেকে একটু দক্ষিণে মাওয়া-ভাগ্যকুল রাস্তার কান্দিপাড়া গ্রামে নির্মিত এ রিসোর্টি একটি অন্য রকম পর্যটন কেন্দ্র।

ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি

ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল গ্রামে অবস্থিত। আনুমানিক ১৯০০ শতকে জমিদার যদুনাথ রায় এই জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এ এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।

আড়িয়াল বিল

আড়িয়াল বিল মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত। আড়িয়াল বিল পদ্মা ও ধলেশ্বরী নদীর মাঝখানে অবস্থিত। এর আয়তন ১৩৬ বর্গ কিলোমিটার।

মেঘলা হলিডে রিসোর্ট

মুন্সীগঞ্জ জেলার বালুয়াকান্দিতে মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট অবস্থিত ।

বাবা আদমের মসজিদ

বাবা আদম শহীদ মসজিদটি মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দরগাবাড়ি গ্রামে অবস্থিত। বাবা আদমের মসজিদ ১৪৮৩ সালে নির্মিত হয়।

রাজা বল্লাল সেনের দিঘী

মুন্সিগঞ্জের রামপালের রাজা বল্লাল সেন জনগনের পানীয় কষ্ট নিবারনের জন্য এই বিশাল দীঘিটি খনন করেন। সেই থেকে এই রাজা বল্লাল সেনের দিঘী নামে পরিচিত।

বার আউলিয়ার মাজার

মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে বার আউলিয়ার মাজারটি অবস্থিত। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের দূরুত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার

মুন্সিগঞ্জ জেলার বিখ্যাত ব্যক্তি

অতীশ দীপঙ্কর : অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলেন একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত, বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধধর্মপ্রচারক ছিলেন। তিনি ৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে মুন্সীগঞ্জের পরগণার বজ্রযোগিণী গ্রামে জন্মগ্রহণ ।

জগদীশ চন্দ্র বসু : ৩০ নভেম্বর ১৮৫৮ সালে বিক্রমপুর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ) জন্মগ্রহন করেন। তিনি ছিলেন একজন বাঙালি পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী এবং কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা ।

আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী : আব্দুল হাকিম বিক্রমপুরী ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সাহিত্যিক। মুন্সীগঞ্জ শহরের কোর্টগাঁও গ্রাম ৫ই মার্চ ১৮৯৩ সালে জমগ্রহস করেন।

আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় ছিল মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত ? তাছাড়া দর্শনীয় স্থান, নামকরণ, ব্যক্তিবর্গ ও ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বন্ধুরা আজকের আর্টিক্যাল পড়ে আপনারা জানতে পেরেছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা কিসের জন্য বিখ্যাত ?

আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভাল লেগেছে। আরো নতুন কিছু জানার জন্য চোখ রাখুন নিউসিজন২৪.কম। আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

আরো খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ