হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির জানাজায় ইমামতি করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। বুধবার (২২ মে) রাজধানীর তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ইরানের সংবাদমাধ্যম ইরনার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাইসি ও তার সফরসঙ্গীদের জানাজায় হাজারো মানুষ কালো পোশাক পরে অংশ নিয়েছেন। জানাজা শেষে তার কফিন ছুয়ে শোক প্রকাশ করেছেন অসংখ্য মানুষ। তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জানাজা শেষে কফিন নিয়ে আজাদি চত্বরে শোকযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন।
দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া এ প্রেসিডেন্টের জানাজায় অংশ নেওয়া জনতার হাতে নানা লেখা সম্বলিত প্লেকার্ড দেখা গেছে। এর আগে তাবরিজ ও কোম শহরেও তার জানাজা হয়। এ সময় সেখানেও বিপুল মানুষের ঢল নামে। এদিকে প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের শেষযাত্রা উপলক্ষে বুধবার তেহরানে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেহরান থেকে মরদেহগুলো বিরজান্দ শহরে নেওয়া হবে। সেখান থেকে মাশহাদে নেওয়া হবে। এসব জায়গায় জনগণের শ্রদ্ধা শেষে রাইসির জন্মশহর মাশহাদে শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠানের পর বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার কমপ্লেক্সে তাকে দাফন করা হবে।
এর আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ প্রেসিডেন্ট রাইসির জানাজায় উপস্থিত থাকবেন। ইরান সফরে তার সঙ্গে বেশ কয়েকজন সিনিয়র পাকিস্তানি কর্মকর্তাও থাকবেন।
রাশিয়ার তাস নিউজ এজেন্সি জানায়, রাশিয়ান ফেডারেশনের স্টেট ডুমার চেয়ারম্যান ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন রাইসির জানাজায় যোগ দিতে ইরান যাবেন।
উল্লেখ্য, গত সোমবার দুর্ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। এরপর দেশটির বিভিন্ন বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ও পূর্ব আজারবাইজানের গভর্নর মালেক রহমতি কেউই আর বেঁচে নেই।
এর আগে গতকাল রোববার (১৯ মে) দেশটির পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।
বলা হচ্ছে, আজারবাইজানে একটি জলাধার প্রকল্প উদ্বোধনের পর পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে যাচ্ছিলেন তারা। ইরানের সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজের খবরে বলা হয়েছে, হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার খবর জানা গেছে সেটি থেকে আসা একটি জরুরি ফোনকলে। প্রেসিডেন্টের সঙ্গে থাকা কর্মকর্তাদের কেউ ওই ফোন করেছিলেন। দুর্ঘটনার পরপরই প্রেসিডেন্ট ও তার সঙ্গীদের উদ্ধারে অংশ নেয় ৪০টি দল। উদ্ধারকারী দল আসে তুরস্ক ও রাশিয়া থেকেও। তবে দুর্ঘটনাস্থলে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘনকুয়াশার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়। এ ছাড়া এ অঞ্চলটি পাহাড়-পর্বতে ভরপুর হওয়ায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টার অভিযান শেষে রাইসির হেলিকপ্টারের খোঁজ পান উদ্ধার কর্মকর্তারা।