বাঁধ বেঙে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আরো কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা নাগাদ ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়।
পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ শ পরিবার। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাক-সবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের। এর আগে গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাত থেকে ভারি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারি বর্ষণ শুরু হয়।
সকাল থেকে বন্দরের পাশ বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগরসহ অন্তত ৩৪টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। বন্ধ হয়ে পড়ে বন্দরের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার।
এর আগে গত মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাধের কিছু অংশ ভেঙে পানি ঢুকতে শুরু করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন। আজ জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান আসার কথা রয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজীর খালসহ বিভিন্ন স্থানে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। তা অতিক্রম করলে আরো এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাক-সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তবে পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চুড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি জানান, দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গতদের মধ্যে দেওয়া হবে।