পদ্মটুনা। জলজ উদ্ভিদ পদ্মফুল থেকে এর জন্ম। স্থানীয়ভাবে এটি পদ্মটুনা নামে পরিচিত। শ্রীমঙ্গলের হাওরে পদ্মফুলের পাশাপাশি ফুটেছে শত শত পদ্মটুনা। নয়নাভিরাম পদ্মফুলের সাথে চোখে পড়ে এই পদ্মটুনা। এটি সকলের কাছে সমাদৃত একটি পদ্মফল। গত মধ্য মার্চ থেকে হাইল-হাওরে পদ্মফুল ফুটার পাশাপাশি পদ্মটুনাও জন্মাতে শুরু করেছে।
লাল আর সাদা পদ্মশোভিত অপরুপ দৃশ্য সহজেই মন কাঁড়ে পর্যটক-দর্শনার্থীদের। এ মনোলোভা দৃশ্য সহজেই মন-প্রাণ ভরে ওঠে আগত দর্শনার্থীদের। পদ্মশোভিত এ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড় জমে। পদ্মফুলের পাশাপাশি ফুটে রয়েছে পদ্মটুনা। সে এক অপরুপ দৃশ্য।
বেসরকারি সংস্থা সিএনআরএস-এর প্রতিবেশ প্রকল্পের সাইট অফিসার মনিরুজ্জামান চৌধুরী জানান, ১৯৯৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্যসংস্থা ইউএসএআইডি’র সহায়তাপুষ্ট ‘ম্যানেজমেন্ট অব এ্যাকুয়াটিক ইকোসিস্টেম থ্রো কমিউনিটি হাজবেন্ড্রি’ (মাচ) প্রকল্প শ্রীমঙ্গলের হাইল-হাওরে জীববৈচিত্র্য রক্ষার কার্যক্রম শুরু করার পর পাল্টে যায় এখানকার দৃশ্যপট। পর্যায়ক্রমে হাইল-হাওরে জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজে নিয়োজিত ছিল বেসরকারি সংস্থা ‘ইন্টিগ্রেটেড প্রটেকটেড এরিয়া কো-ম্যানেজমেন্ট’ (আইপ্যাক) এবং ‘ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট ইকোসিস্টেম এ- লাইভলিহুড প্রজেক্ট’ (ক্রেল)। বর্তমানে কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা ‘প্রতিবেশ’।
স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বড়গাঙিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠন সুত্র জানায়, সরকারি সংরক্ষিত মৎস্য অভয়াশ্রম বাইক্কা বিলসহ হাইল-হাওরে স্বচ্ছ টলটলে পানিতে অনেক নীচ পর্যন্ত জলজ লতাগুল্ম দেখা যায়। আর জলের ওপর ফুটে থাকে অসংখ্য পদ্মফুল। এর ফাকে ফাকে ফুটে রয়েছে অসংখ্য পদ্মটুনা। এছাড়াও পানি সিংড়া, শালুক, পাখি, মাছ, বৃক্ষসহ ১০১ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ রয়েছে এ হাওরে। এছাড়াও মাঝে মাঝে চোখে পড়ে বিরল নীলপদ্ম।
সুত্র জানায়, পদ্মটুনা আহরন ও বিক্রি করে হাওরপাড়ের অনেক মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। হাওর পাড়ের মানুষ শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন বাজারে পদ্মটুনা বিক্রি করে থাকেন। পদ্মটুনা দেখতে হালকা সবুজ। ফলগুলো পুর্নাঙ্গ হলে হলুদ বর্ন ধারন করে। ফলের ধারক পেস্ট কালারের হয়। বীজগুলো চক্রাকারে সাজানো থাকে। আকৃতি গোলাকার। সবার কাছে সমাদৃত পদ্মটুনা বীজ খেতে সুস্বাদু।