দেশের প্রথম চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ৯৭ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি ৩ শতাংশ কাজ শেষ হলেই দ্বার খুলবে দেশের প্রথম এই টানেলের। যদিও টানেলের মূল কাজ শেষ হয়েছে আগেই। এ মুহূর্তে চলছে নিরাপত্তাজনিত কার্যক্রমগুলোর যাচাই-বাছাই। শিগগির এই টানেলের কাজ শেষ হবে জানিয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, এখন ইলেক্ট্রো মেকানিক্যাল কাজ চলছে।
প্রকল্প চালুর বিষয়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে। ঠিক কতদিন লাগবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। তবে সেপ্টেম্বরে টানেল উদ্বোধনের কথা জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশে নির্মিত এই টানেলটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ও আনুষঙ্গিক কাজগুলো এখন শেষ করা হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরে টানেলটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। চার লেন বিশিষ্ট দুটি টিউবের
প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২.৪৫ কিলোমিটার। মূল টানেলের পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে ৫.৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং আনোয়ারা প্রান্তে একটি ৭২৭ মিটার ফ্লাইওভার থাকছে।
জানা গেছে, নির্মাণের আগে করা সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী টানেল চালুর পর এর ভেতর দিয়ে বছরে ৬৩ লাখ গাড়ি চলাচল করতে পারবে। সে হিসেবে দিনে চলতে পারবে ১৭ হাজার ২৬০টি গাড়ি। ২০২৫ সাল নাগাদ টানেল দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ২৮ হাজার ৩০৫টি যানবাহন চলাচল করবে, যার মধ্যে অর্ধেক থাকবে পণ্যবাহী পরিবহন। ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার ৯৪৬টি এবং ২০৬৭ সাল নাগাদ ১ লাখ ৬২ হাজার যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা আছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কর্ণফুলী নদীর দুই তীর সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেলটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। টানেল চালু হলে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যোগাযোগ সহজ হবে। দক্ষিণ চট্টগ্রামে গড়ে উঠবে নতুন শিল্পকারখানা।