সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে চাল, ডাল ও আলুর দাম। অস্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজারও। ফলে সংসারে বাড়তি খরচ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্য মায়ের মানুষ।
দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ীরা। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানো হয়েছে বলে একজনের অভিযোগ আরেকজনের বিরুদ্ধে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি ঠেকাতে বাজারের প্রতি নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ভোক্তারা।
মধ্যবাড্ডা বাজারের ব্যবসায়ী শামসুল আলম ঢাকা পোস্টে বলেন, মোটা-চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে মোটা চাল কিনেছি ৫২ টাকা কেজিতে। আজকে দাম চাচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। কেজিতে তিন টাকা বেড়েছে চালের দাম।
চালের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করেছেন মধ্য বাড্ডা বাজারের ব্যবসায়ী নাজমুল হুদা। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে চালের দাম। মোটা-চিকন সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে।
তিনি বলেন, তিনদিন আগে পাইজাম চাল বিক্রি করেছি ৫২ টাকা কেজিতে। আজকে বিক্রি করছি ৫৫ টাকা কেজি দরে। বিআর-২৮ চাল বিক্রি করছি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে।
দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আড়ত থেকে বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই আমরাও বেশি দামে বিক্রি করছি। দাম বাড়াচ্ছে আড়তদাররা। আড়তদাররা বলছেন, ভারত সরকার চাল আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ করায় দাম বেড়েছে।
কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী সাইদুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারত সরকার চালের ওপর শুল্ক আরোপ করার পর থেকে মিল মালিকদের কাছ থেকে চাহিদা অনুসারে চাল পাওয়া যাচ্ছে না। ফলের চালের দাম বাড়ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিআর-২৮ চাল এখন ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে; যা গত সপ্তাহে ৫২ থেকে ৫৮ টাকার মধ্যে ছিল। মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ও নাজির চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের পাশাপাশি মসুর ডাল কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। বলা হচ্ছে এ দুটি পণ্যের দাম বেড়েছে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায়।
বাজারগুলোতে গত সপ্তাহে খুচরায় প্রতি কেজি মোটা মসুর ডাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই ডালের কেজি এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায়। মাঝারি দানার মসুর ডালের কেজি ৫ টাকা বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় উঠেছে। আর সবচেয়ে ছোট দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি। আর আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা।
রামপুরা বাজারের মুদি দোকানি সোহাগ বলেন, বৃষ্টির কারণে আলু আর ডালের প্রতি মানুষের চাহিদা বেশি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
তাছাড়া সবজির মধ্যে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, গোল বেগুন বিক্রি হচছে ১২০ টাকা কেজি, মূলা ৫০, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৩০, কাঁচামরিচ ১২০, ঝিঙ্গা ৭০, পটল ৬০, কচুরমুখী ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০, ফুলকপি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকায়, প্রতি পিস লাউ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।