লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় কি? পড়াশোনা তো সবাই করে। কেও করে দায়সাড়া,কেও করে সিরিয়াসলি! যে দায়সাড়া পড়াশোনা করে সে সবসময় পিছিয়ে থাকে এবং যে সিরিয়াসলি পড়াশোনা করে সে এগিয়ে থাকে সব সময়।
এর কারণ দায়সাড়া কাজের মাধ্যমে কোনো কিছুই ঠিকঠাক করা সম্ভব নয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে যদি কোনো কাজে মনোযোগ জ্ঞাপন না করা হয় তবে সেই কাজে সফলতা অর্জন সম্ভব নয় । কিন্তু লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় কি? আদৌ কোনো উপায় রয়েছে – নাকি “যার আটেও হয় না,তার আশিতেও হয় না” এই লজিক দিয়েই সাড়া জিন্দেগী পার করে দিতে হবে?” – উত্তর হলো – না !
মূলত আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় অর্থাৎ সবচেয়ে কার্যকর উপায় সম্পর্কে – যা আপনার জীবন বদলে দিতে পারে।
মনোযোগী হওয়ার উপায়
মনোযোগী হওয়ার অর্থ হলো কোনো কাজের প্রতি পুরো ফোকাস দেওয়া। মনোযোগী হতে হলে আপনাকে প্রথমে সেই কাজের উপরে আগ্রহ আনতে হবে। যদি কোনো কাজে আপনার আগ্রহ না থাকে তবে সেই কাজে আপনি কখনোই মনোযোগ আনতে পারবেন না । মনোযোগী হতে হলে আপনাকে আপনার কাজের বিষয় আগে জানতে হবে। খুটি নাটি সব বিষয় জেনে নেওয়ার পরেও আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে।
এরপর আপনাকে মাথা থেকে সকল ধরণের বাজে চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে হবে। আপনার মাথায় যে সকল দুঃচিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে সেগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। বাজে-চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হলে আপনাকে অবশ্যই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে।
মনোযোগী হওয়ার অর্থ নেই না যে আপনি সেই কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন ! কিন্তু কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে , মাথা থেকে বাজে চিন্তা দূর হয়ে যায় এবং এর মাধ্যমে আপনি মনোযোগী হতে পারবেন।
মনোযোগী হওয়ার আরেকটি উপায় হলো গ্রুপ ওয়ার্ক । একই দলে কাজ করলে কাজ করার আগ্রহ বাড়ে। অনেক সময় একটি কম্পিটিশনের সৃষ্টি হয় – এটি আরো ইতিবাচক প্রভাব ফেলে আপনার মনোযোগ বৃদ্ধির কাজে।
লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়
লেখা পড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় , সত্যি বলতে একেক জন এটিকে নিজেদের মতো করে নির্ধারণ করেন। একেক জনের কাছে একেকটি স্ট্র্যাটেজি রয়েছে, সবার ক্ষেত্রে সব স্ট্র্যাটেজি কাজ করে না – তবুও যদি কাজ করে তাহলে উপকৃত আপনিই হবেন !
- বাড়ি পড়াশোনা করুন!হ্যা – আপনার যদি বাড়িতে পড়াশোনা করার যথেষ্ট ভালো পরিবেশ থেকে থাকে এবং আপনি যদি সেখান থেকে মোটামোটি ভালো গাইডেন্স পান, তবে বাড়িতে পড়াশোনা করুন। কেননা বাড়ির উষ্ণতায় পড়া-শোনা করার মতো আনন্দ পৃথীবির আর কোথায় পাবেন না। অনেকে বাড়ির পাশে ভালো স্কুল কলেজ থাকা শর্তেও শহরে আসেন আরো বেশী অ্যাডভানস লেভেলের পড়াশোনার জন্য ! সত্যি বলতে এতে করে পড়াশোনা তো দূরে থাক,জীবন ধারনই কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
- পড়াশোনার মাঝে বিরতি দিন ! হতে পারে সেটা ছোট্টো বিরতি, হতে পারে সেটা কোনো বড় বিরতি ! যদি দেখেন, যে এক টানা ৩-৪ ঘন্টা পড়তে পড়তে বোরড হয়ে গেছেন,তবে বাইরের বারান্দা থেকে একটু ঘুরে ফিরে আসুন। অথবা পড়ার ঘরের ভেতরেই একটু সামান্য ঘোরাফেরা করুন। আর যদি কয়েক মাস লাগাতার পড়ার পর এক ঘেয়েমি এসে যায় তাহলে কোনো একটা জায়গা থেকে ঘুরে আসুন! মোট কথা , নিজেকে একটু বিরতি দিন ! অবসর না পেলে মানুষের ক্লান্তি কাটে না। এটি লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায় গুলির ভেতরে সবচেয়ে কার্যকর !
- অনেকে পড়ার সময় মোবাইল ফোন বা অন্য ডিভাইজ দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন,কিন্তু এটি কোনো স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। আর তাই ডিভাইজ দূরে সড়িয়ে নয় বরং মানুসিকভাবেই নিজেকে ডিভাইজ এডিকশন থেকে মুক্ত করে ফেলুন !
- গ্রুপ স্টাডি করুন । এতে করে আপনার পার্টনারের সাথে আপনার কম্পিটিশন বাড়বে , এটি অবশ্যই একটি ইতিবচক দিক ! পড়শোনায় একটু কম্পিটিশন থাকুক – কে না চায় বলুন?
ক্লাসে মনোযোগী হওয়ার উপায়
ক্লাসে স্যারেরা বলে মনোযোগী হতে ! কিন্তু কি করে মনোযোগী হবো ? এই প্রশ্ন আমাদের সবারই ! কিন্তু জেনে রাখা উচিত আমরা যদি আমাদের ক্লাসের ভেতরে ক্রমান্বয়ে করে যাওয়া কিছু বদঅভ্যাস ঝেড়ে ফেলতে পারি,তবে আমরা ক্লাসে মনোযোগী হতে পারবো !
- ক্লাস চলাকালে কখনোই সহপাঠির সাথে কথা বলবেন না। প্রয়োজনীয় কথা হলেও না ! এমন কি পড়াশোনা সম্পর্কিত কথাও হলে বলবেন না। এতে করে আপনি আপনার শিক্ষকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ লেকচার মিস করে ফেলতে পারেন, যা হয়তো কার্যকারী কিছু ছিলো !
- ক্লাসে কখনোই কোলাহল করবেন না , এবং যারা কোলাহোল করে তাদেরকেও প্রতিহত করুন !
- ক্লাসে স্যার যে কথাগুলো বলে,সেগুলো এমন ভাবে শোনার চেষ্টা করুন, যেনো মনে হয় আপনি কোনো থিয়েটরে বসে নাটকের হৃদয়স্পর্শী সংলাপ শুনছেন। ধীরে ধীরে অভ্যাস পড়ে তুলুন ! চেষ্টাটাই মূল বিষয়!
কিভাবে লেখাপড়ায় ভালো করা যায়
আগ্রহের সাথে লেখা পড়া করার চেষ্টা করুন ! এবং অবশ্যই সময়ের কাজ সময়ে করুন! আপনি যদি সময়কে গুরুত্ব দেন,তবে সময় আপনাকেও গুরুত্ব দেবে ! – এটিই মূলত ভালো করে লেখা পড়ার করার মূল,সহজ ও সরল পন্থা ! সময়কে গুরুত্ব দিয়ে,সময়কে কাজে লাগিয়ে একজন ব্যাকবেচঞ্চার চাইলেও ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করতে পারে ! ঠিক তেমনই মুদ্রার অপর পাশটাকেও বর্ননা করা সম্ভব! যে, একজন টপার সময়ের গাফিলতি করে ক্লাসের ব্যাক বেঞ্চারেও পরিণত হতে পারে। শুধু তাই নয় এর জন্য তার জীবনও বরবাদ হয়ে যেতে পারে !
লেখা পড়া সবটুকুই নিজের ইচ্ছা এবং আগ্রহ থেকে আসে ! ভুলে গেলে চলবে না – পড়াশোনা করে জীবনে কিছু অর্জন করাই বড় বিষয়- যা দিয়ে আপনি পরবর্তী জীবনে কিছু অর্জন করতে পারবেন ! পরীক্ষার খাতায় পেজ ভর্তি করে লিখে আসা, রেজাল্ট ভালো করা এগুলো মোটেও মূখ্য বিষয় নয়, কোনো কালে ছিলোও না !
প্রিয় পাঠক, এই আর্টিকেলের মাধ্যেমে আমরা জেনেছি মনোযোগী হওয়ার উপায়, লেখাপড়ায় মনোযোগ বৃদ্ধির উপায়,ক্লাসে মনোযোগী হওয়ার উপায়,কিভাবে লেখাপড়ায় ভালো করা যায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিবরণ সমেত যাবতীয়!
আসা করি আপনি আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।