নাটোরের সিংড়ায় এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে গণধর্ষণের নৃশংস ঘটনায় আদালত দোষী ৬ জনকে ফাঁসি ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ এবং একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে দোষীদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
বুধবার (৫ এপ্রিল) বেলা ১১টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুর রহিম এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলেন ছাব্বির আহম্মেদ, রেজাউনুল রাব্বি, নাজমুল হক, রাজিবুল হাসান, রিপন সেখ ও শহিদুল ইসলাম। যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মনিরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আতাউল ইসলাম আতাউর ও রেজাউল করিম।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে ১৯ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে ওই কলেজছাত্রী জরুরি কাজে কলেজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এসময় পথে পরিচিত আসামি সাব্বির আহমেদের সঙ্গে ওই কলেজ ছাত্রীর দেখা হয়। পরে ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে বেড়ানোর কথা বলে নাটোরের সিংড়া উপজেলার পেট্রো বাংলা এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে আসামি নাজমুল হক, রাজিবুল হাসান, রিপন সেখ ও শহিদুল ইসলাম ওই কলেজছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে ভ্যানযোগে কলম মির্জাপুর গ্রামে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আসামি মনিরুল ইসলাম, খায়রুল ইসলাম, আতাউল ইসলাম ও রেজাউল করিমসহ আরও ২/৩ জন মিলে কলম মির্জাপুর এলাকার ঈদগাঁও মাঠে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় স্থানীয় লোকজন বুঝতে পেরে ওই ছাত্রীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার এবং আসামিদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরেরদিন ২০ অক্টোবর সকালে ওই কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে সিংড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ধর্ষণ মামলায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আব্দুর রহিম ৬ জনের মৃত্যুদ- ও ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদ-াদেশ প্রদান করেন। এসময় একজন নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে খালাস দেন আদালত।
এদিকে মামলার রায়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ওই ছাত্রী বলেন, আমার উপর যে বর্বরোচিত নির্যাতন করা হয়েছে তার উপযুক্ত বিচার রাষ্ট্র করেছে। তবে আমি আর হয়তো কোনদিনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবো না।
মামলার বাদী ও ওই ছাত্রীর বাবা জানান, ওই ঘটনার পর আমি পরিবারের সকলকে নিয়ে নিজ এলাকা ছেড়ে অনত্র চলে আসি। মামলার রায়ে আমরা পরিবারের সকলে সন্তুষ্ট।