মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
spot_img

দিনাজপুর কিসের জন্য বিখ্যাত । Dinajpur kiser jonno bikkhato

দিনাজপুর জেলার সম্পর্কে কিছু তথ্য

বর্তমানদিনাজপুরজেলাটি রংপুর বিভাগের অবস্থিত। যা বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম জেলা গুলোর মধ্যে একটি এটি দেশের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ১৩টি উপজেলা ৮টি পৌরসভা নিয়ে এই জেলাটি গঠিত হয়েছে

 

 

দিনাজপুর জেলার পূর্ব নামছিল ঘোড়াঘাট” সেটাই কালক্রমে দিনাজপুর জেলায় রুপান্তরিত হয়েছে বর্তমান যে দিনাজপুরকে আমরা চিনি বা জানি সেটা আসলে গঠিত হয় ১৭৮৬ সালে যার আয়তন: ৩৪৪৪.৩০ বর্গ কিমি বা ১৩২৯.৮৫ বর্গ মাইল 

অবস্থানের দিক দিয়ে ২৫°১০´ থেকে ২৬°০৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°২৩´ থেকে ৮৯°১৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ সীমানার ক্ষেত্রে বলা যায় এই জেলার উত্তরে ঠাকুরগাঁও পঞ্চগড় জেলা দ্বারা বেষ্টিত,  দক্ষিণেগাইবান্ধা জয়পুরহাট জেলা থাকলেও পূর্বের নীলফামারী রংপুর জেলা এর সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পর্যন্ত

দিনাজপুর কিসের জন্য বিখ্যাত

 

জনসংখ্যা২৬৪২৮৫০ জন প্রায়। যার মধ্যে পুরুষ ১৩৬৩৮৯২, মহিলা ১২৭৮৯৫৮ জন প্রায় মুসলিম ২০৫৭০৩০ জন হিন্দু ৫২১৯২৫ জন বৌদ্ধ ২৭৯৯৬, খ্রিস্টান ১০৯৩ এবং অন্যান্য ৩৪৮০৬ জন প্রায় এই দিনাজপুর জেলায় বিভিন্ন আদিবাসির বসবাস রয়েছে প্রাচীন কাল থেকেই। যেমন উল্লেখযোগ্য- মালপাহাড়ী,মাহলী,ওরাওঁ ,সাঁওতাল, কোল ইত্যাদি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে এই জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে।

জেনে নিন দিনাজপুর কিসের জন্য বিখ্যাত ( dinajpur kiser jonno bikkhato )

আমরা অনেকের কাছেই লিচু একটু প্রিয় ফল। যার সাথে অন্য ফলের কোনো তুলনা হয় না। যা একটি সুস্বাদু মিষ্টি ফল। আমরা অনেকেই জানি আবার অনেকেই জানি না যে, এই লিচু কোথায় উৎপন্ন হয় এবং বাংলাদেশে কোন জেলায় বেশি উৎপন্ন হয়? 
আসলে দিনাজপুর জেলা লিচুর জন্য সারা বাংলাদেশে বিখ্যাত। এই জেলায় উৎপন্ন লিচুগুলো মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ বোম্বাই,মাদ্রাজী, চায়না-৩ ও বেদানা। এছাড়া ও দিনাজপুর চিড়া, কাটারিভোগ চাল, পাপড় জন্য ও বিখ্যাত। 
 

 

দিনাজপুর কিসের জন্য বিখ্যাত ( লিচু ) । Dinajpur kiser jonno bikkhato

 

দিনাজপুর জেলার দর্শনীয় স্থান

দিনাজপুরজেলার বিখ্যাত কিছু স্থানের নাম নিম্নে প্রদত্ত হইলো:

  • দিনাজপুর রাজবাড়ি
  • স্বপ্নপুরী
  • রামসাগর
  • কান্তজিউর মন্দির
  • কয়লাখনি
  • হাজীমোহাম্মদদানেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
  • নয়াবাদ মসজিদ
  • ঘোডাঘাট দুর্গ
  • সিংড়াফরেস্ট
  • সীতাকোট বিহার

দিনাজপুর জেলার প্রধান নদীর নাম

এইজেলার প্রধান নদীর নাম বলতে গেলে যমুনা, তুলসীগঙ্গা, পূনর্ভবা, আত্রাই

মুক্তিযুদ্ধের সময় দিনাজপুরের অবস্থান

মুক্তিযুদ্ধের সময় নং সেক্টরের অধীন থাকা এই জেলাটিতে ২৯ মার্চ ১৯৭১ ফুলবাড়ী উপজেলার দিনাজপুর রোডে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি, গোলাবারুদ, অস্ত্রশস্ত্রসহ বহু রসদপত্র দখল করে এপ্রিল পার্বতীপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বাগবাড়ী পেয়াদাপাড়ায় পাকবাহিনী প্রায় ৩০০ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয় ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী হাকিমপুর উপজেলার হিলি আক্রমণ করে হাকিমপুর ছাতনীতে পাকবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন বিরামপুর উপজেলার কেটরা হাটে মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীর লড়াইয়ে জন পাকসেনা নিহত এবং ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ২০ জুলাই পাকসেনারা নবাবগঞ্জ উপজেলার খয়েরগনি গ্রামে ২১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে তারা ১০ অক্টোবর নবাবগঞ্জ উপজেলার চড়ারহাটে ১৫৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে ১৩ নভেম্বর পাকবাহিনী বিরল উপজেলার বিজোড় ইউনিয়নের বহলায় ৩৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে ২১ নভেম্বর১১ ডিসেম্বর হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৩৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীরগঞ্জ উপজেলার ভাতগাঁও ব্রীজের পূর্বপাড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত এবং পাকবাহিনীর দুটি ট্যাংক ধ্বংস হয় লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন ডিসেম্বর সাধারন জনগণ বিরামপুর উপজেলার বেপারীটোলায় একটি জীপ আক্রমণ করে কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে ১৫ ডিসেম্বর বগুলাখারীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন এছাড়াও বিরল উপজেলার  বহবলদীঘিতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ১০০ জন পাকসেনা নিহত হয় কাহারোল উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১০ জন পাকসেনা জন নিরীহ বাঙালি নিহত হয়

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নবধ্যভূমি, গণকবর , স্মৃতিসৌধ এই জেলাতেই রয়েছে

 

শিক্ষাক্ষেত্রে দিনাজপুরের অবস্থান

শিক্ষাক্ষেত্রেএই জেলার গড় হার ৪৫.%; পুরুষ ৫১%, মহিলা ৪০% পিছিয়ে জেলার অন্যান্য জনগোষ্টিও

উল্লেখযোগ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান:

দিনাজপুরবিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় 

পার্বতীপুর ডিগ্রী কলেজ (১৯৬৪)

বিরলডিগ্রি কলেজ (১৯৭২)

দাউদপুরডিগ্রি কলেজ (১৯৭২)

হাকিমপুরডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪)

উইলিয়ামকেরী নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল (১৭৯৯)

দিনাজপুরজিলা স্কুল (১৮৫৪)

দিনাজপুরসরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৯)

জুবিলিহাইস্কুল (১৮৮৭)

দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (১৯৬৪)

মহারাজাগিরিজানাথউচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩)

রাজারামপুরএসইউ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩)

মোল্লাপাড়াদ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩)

পার্বতীপুরপাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪)

রুদ্রানীউচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫)

সুজাপুরউচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯)

ফুলবাড়ীজিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০)

পলাশবাড়িউচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১)

জ্ঞানাঙ্কুরপাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫)

সারদেশ্বরীবালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭)

দিনাজপুরহাইস্কুল (১৯৩০)

একইরমঙ্গলপুরউচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০)

কাহারোলহাইস্কুল (১৯৪০)

হাবড়াউচ্চ  বিদ্যালয়(১৯৪২)

রানীগঞ্জদ্বিমুখিউচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫)

নুরুলহুদাউচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫১)

নিউপাকেরহাটউচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯)

বীরগঞ্জসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২)

মিশনপ্রাথমিকবিদ্যালয় (১৮৪২)

জুড়াইফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫২)

ভবানীপুরইসলামিয়াকামিল মাদ্রাসা (১৯৭২)

দিনাজপুর জেলার মানুষের আয়ের উৎস

এইজেলার মানুষের ৬৩.৯০% আয়ের প্রধান উৎস কৃষিতে  অকৃষিশ্রমিক .২৯%, শিল্প .৯০%, ব্যবসা ১২.৮৯%, পরিবহণ যোগাযোগ .৩৫%, চাকরি .৫৮%, নির্মাণ .৩৭%, ধর্মীয় সেবা .১৭%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স .২৩% এবং অন্যান্য .৩২%

দিনাজপুর জেলার পত্রপত্রিকা

দিনাজপুর জেলার পত্রপত্রিকা সাময়িকী মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তর বাংলা, প্রতিদিন, দৈনিক উত্তরা, তিস্তা, জনমত, উত্তরবঙ্গ,উত্তরাঞ্চল , অন্তর কণ্ঠ, আজকের প্রতিভা, সীমান্ত বার্তা, পত্রালাপ ইত্যাদি দৈনিক পত্রিকা পাওয়া যায়। 

সাপ্তাহিক পত্রপত্রিকা : অতঃপর এবং আজকের বার্তা 

মাসিক পত্রিকা: নওরোজ ইত্যাদি।

দিনাদপুরের লোকসংস্কৃতি

দিনাদপুরের লোকসংস্কৃতিতের মধ্যে অন্যতম পাঁচালী, কীর্তন, ভাওয়াইয়া গান, গোরক্ষনাথের গান, মেয়েলি গীতগান, চড়কের গান, জারিগান , প্রবাদ প্রবচন, ছিলকা, হেয়ালী, বাউল সংগীত ইত্যাদি দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতি। কিন্তু বর্তমানে যা আগের তুলনায় অনেক কম বা বিলুপ্ত প্রায়।  

 

আজকে আপনাদের সাথে এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করেছি দিনাজপুর কিসের জন্য বিখ্যাত এবং দিনাজপুর জেলা সম্পর্কে কিছু তথ্য  আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি।আসা করি আমাদের আজকের আর্টিকেল খুবই ভালো লেগেছে ও আপনাদের কিছুটা হলেও উপকারে এসেছে। আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 

 

আরো খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ